স্বামী নিরুদ্দেশ , বাবা মারা গেছেন তবুও সন্তান কোলে যুদ্ধজয়ের লড়াই শিবানীর

8th March 2021 10:17 am বর্ধমান
স্বামী নিরুদ্দেশ , বাবা মারা গেছেন তবুও সন্তান কোলে যুদ্ধজয়ের লড়াই শিবানীর


নিজস্ব সংবাদদাতা ( পঃ বর্ধমান ) :  বাবা মারা যাওয়ার পর সংসারের হাল ধরতে চায়ের সসপেন ধরেন কাঁকসার সিংপাড়া বাসিন্দা শিবানী গোস্বামী। দেখতে দেখতে কেটে গেছে ৫৫ টি বছর। চা বিক্রি করেই সংসারের হাল ধরতে হয় তাঁকে। কাঁকসার রথ তলায় ছোট্ট একটি চায়ের দোকান। ভোর থেকেই সেখানে চা খেতে ভিড় জমান এলাকার মানুষ।
বাবা মারা যাওয়ার আগেই কোলে তখন ৬ মাসের একমাত্র সন্তান। হঠাৎ করেই নিরুদ্দেশ হয়ে যান তার স্বামী। বহু খোঁজাখুঁজির পরেও তার কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি। অপরদিকে বাবা মারা যাবার পর এই সংসারের হাল ধরতে অবশেষে বাবার দোকানে গিয়ে চায়ের সসপেন ধরেন শিবানী দেবী। এরপর ছেলেকে মানুষ করা, তাকে বড় করে তোলা, তার বিয়ে দেওয়া সবই হয়েছে সেই চায়ের দোকান থেকেই। বর্তমানে ছেলে বউ নাতি-নাতনি নিয়ে তার বিরাট সংসার। তবুও গত ৫৫  বছর ধরে একইভাবে নিয়ম করে তিনি সকালে দোকানে আসেন এবং রাত্রে বাড়ি যান। দেখতে দেখতে বয়স তার প্রায় সত্তর ছুঁইছুঁই । তবু আজও জীবন যুদ্ধে হার মানতে চান না তিনি। গত ৫৫ বছর ধরে সাহায্যের হাত কেউ বাড়িয়ে না দিলেও, কিংবা কেউ পাশে না দাঁড়ালেও গত কয়েক মাস হল তিনি বৃদ্ধ ভাতা পেতে শুরু করেছেন। এলাকার মানুষ বলেন শিবানী দেবী সংগ্রাম করে লড়াই করে বেঁচে থাকা একজন মহিলা না বলে তিনি একজন উদাহরণ অন্যদের কাছে সেটা বলাই বরং বললে ভাল হবে। পড়াশোনার গণ্ডি পেরিয়ে মায়ের কাজে হাত লাগান তার ছেলে রামকৃষ্ণ গোস্বামী। গত কয়েক বছর ধরে মাকে সাহায্য করে আসছে তার একমাত্র ছেলে। ছেলে রামকৃষ্ণ বলেন মার বয়স হয়েছে তবে তার যতদিন ইচ্ছা সে দোকানে আসবে দোকান সামলাবে। তবে বয়স হলে যদি কাজ না করতে পারে তবে তিনি বাড়িতে বসেই  বিশ্রাম নেবেন।আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে  শিবানী দেবীর জীবন সংগ্রামকে কুর্নিশ জানিয়েছেন এলাকার মানুষ।  তাকে কুর্নিশ জানালাম আমরাও।





Others News

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : প্রায় এক বছর আগে আবেদন করেও মেয়ের জাতিগত শংসাপত্র মেলেনি । আবেদনকারীদের জাতি শংসাপত্র দেওয়ার
ক্ষেত্রে দেরি করা যাবেনা বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।কিন্তু বাস্তবে ঠিক তার উল্টোটাই ঘটে চলেছে।প্রায় এক বছর আগে  চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে  আবেদন করেছিলেন মা।কিন্তু মেয়ে কে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসলেও জাতি  শংসাপত্র আজও না মেলায় কার্যত হতাশ হয়ে পড়েছেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারির রাধাকান্তপুর নিবাসী ঊর্মিলা দাস।ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য ঊর্মিলাদেবী বৃহস্পতি বার মেমারি ১ ব্লক বিডিও অফিসে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন। শংসাপত্র পাবার জন্য বিডিও সাহেব কি ব্যবস্থা করেন সেদিকেই এখন তাকিয়ে ঊর্মিলাদেবী। 

বিডিওকে লিখিত আবেদনে ঊর্মিলাদেবী জানিয়েছেন ,তাঁর স্বামী মানিক দাস দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী ।বছর ১০ বয়সী তাঁদের একমাত্র কন্যা গ্রামের বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত কালে তাঁর ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য তিনি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারী আবেদন করেছিলেন।  উর্মিলাদেবী বলেন ,তার পর থেকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে  গেলেও তিনি তাঁর মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পান না।মেয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসায় গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে তিনি শংসাপত্রের বিষয়ে মেমারি ১ ব্লকের বিডিও অফিসে খোঁজ নিতে যান।জাতি শংসাপত্র বিষয়ের বায়িত্বে থাকা বিডিও অফিসের আধিকারিক তাঁকে অনলাইনে এই সংক্রান্ত একটি নথি বের করে আনতে বলেন । অনলাইনে সেই নথি বের করেনিয়ে তিনি ফের ওই আধিকারিকের কাছে যান । তা দেখার পর ওই আধিকারিক তাঁকে  ২০ দিন বাদে আসতে বলেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন , তিনি ২৫ দিন বাদে যাবার পর ওই আধিকারিক তাঁকে গোপগন্তার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে খোঁজ নেবার কথা বলেন । তিনি এরপর গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যান । নথি ঘেঁটে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে কোন ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি।ঊর্মিলাদেবী দাবী করেন ,এই ভাবে তিনি একবার বিডিও অফিস , আবার পঞ্চায়েত অফিসে দরবার করে চলেন । কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হয় না। মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য  গত ১৩ ডিসেম্বর ফের তিনি বিডিও অফিসে যান ।ওই দিনও বিডিও অফিসের জাতি শংসাপত্র বিষয়ক বিভাগের আধিকারিক তাঁকে একই ভাবে পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যেতে বলে দায় সারেন। পরদিন তিনি পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে গেলে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ফের জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে  ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি । কেন মেয়ের জাতি শংসাপত্র পাচ্ছেন না সেই বিষয়ে  না পঞ্চায়েত না ব্লক প্রশাসনের কর্তৃপক্ষ কেউই তাঁকে কিছু জানাতে পারেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন ,পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির আগে তার মেয়ে যাতে ওবিসি শংসাপত্র পেয়ে যায় তার ব্যবস্থা করার জন্য এদিন তিনি বিডিওর কাছে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন । মেমারী ১ ব্লকের বিডিও আলী মহম্মদ ওলি উল্লাহ এদিন বলেন ,“জাতি শংসাপত্র পাবার জন্য হাজার হাজার আবেদন জমা পড়ছে । তবে ঊর্মিলাদেবীর কন্যা দ্রুত যাতে বিবিসি শংসাপত্র দ্রুথ পান সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে “। মেমারির বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য্য বলেন,’মেমারি  বিধানসভা এলাকার আবেদনকারীরা দ্রুত যাতে জাতি শংসাপত্র পান সেই বিষয়ে প্রশাসনকে আরও তৎপর হওয়ার কথা বলবো’।